খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ মাঘ, ১৪৩১ | ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  ফসল কাটা নিয়ে চাঁপাই নাবাবগঞ্জ চোকা-কিরণগঞ্জ সিমান্তে উত্তেজনা, ককটেল বিস্ফোরণ বেশ কয়েকজন আহত; সমাধানের চেষ্টায় বিজিবি-বিএসএফ
  বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের সাবেক প্রধান মাসুদ বিশ্বাস গ্রেপ্তার

চাঁদাবাজি-দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ চলবে: জামায়াত আমির

গেজেট ডেস্ক

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘চাঁদাবাজি-দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ চলবে। যুদ্ধ কতক্ষণ? যতক্ষণ না ইনসাফ কায়েম হয়। এই ইনসাফ দিতে পারে একমাত্র আল কোরআন। এই কোরআনের শাসন দিয়ে আমরা বাংলাদেশ গড়তে চাই।’

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে জেলা ও মহানগর জামায়াত আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াত আমির এ অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমরা বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত, ন্যায়-ইনসাফের মাধ্যমেই বাংলাদেশ গড়তে চাই। এ জন্য আমাদের লড়াই এখনও চালিয়ে যেতে হবে। আমরা ত্যাগ অনেক করেছি। আরও ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। জীবন খুব ছোট, কাজ অনেক বড়। বিশ্রামের কোনও সময় নেই।’

সারা দেশে চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের সন্তানেরা এত এত রক্ত কেন দিলো? কারণ, তারা চেয়েছে, এই সমাজের সব ধরনের দুঃশাসন এবং দুর্নীতির কবর রচিত হোক। যারা এসব করছেন, বিনয়ের সঙ্গে বলি, এগুলো বন্ধ করুন। তবে যদি আমাদের এই বিনয়ী অনুরোধ কেউ না মানেন, তাহলে আমাদের যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি। সন্তানেরা স্লোগান দিচ্ছে– “আবু সাঈদ মুদ্ধ/ শেষ হয়নি যুদ্ধ”। যুদ্ধ চলবে।’

তিনি বলেন, ‘রাজশাহী, যেটাকে শিক্ষার ভিলেজ বলা হয়। আমি আশা করি, ৫ তারিখের (৫ আগস্ট) পর রাজশাহীতে কোনও চাঁদাবাজি হয় না। এখানকার মানুষ ভদ্র, বিনয়ী এবং সৎ। কেউ চাঁদাবাজি এখানে করে না, ঠিক না?’ এ সময় নেতাকর্মীরা ‘চাঁদাবাজি হয়’ বলে আওয়াজ তোলেন। আমির প্রশ্ন করেন, ‘এখানেও চাঁদাবাজি হয়? এখানেও ফুটপাত দখল হয়? হাটবাজার, বালুমহাল, জলমহাল, যানবাহন স্ট্যান্ড, সবগুলোতে দখলদারি হয়?’ তখনও মাঠভরা নেতাকর্মীরা ‘হয়’ বলে আওয়াজ তোলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘তাহলে আমাদের শহীদদের রক্তের প্রতি এটা কি ভালোবাসা? এই কাজ যারা করেন, বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করি, এই কাজটা ছেড়ে দেন। আমাদের শহীদরা কষ্ট পাবেন। অফিস আদালতে ঘুষ বাণিজ্য আছে, আবার মামলা বাণিজ্যও অনেকে করেন। তাদের প্রতি আমাদের অনুরোধ, ভাই, এই কাজগুলো করবেন না। আমাদের শহীদদের আত্মা বড় কষ্ট পাবে। আমাদের জীবন্ত সন্তানরা যারা শহীদ হওয়ার নিয়্ত করে রাস্তায় নেমেছিল, তারা কষ্ট পাবে। তাদের কষ্ট দেবেন না।

‘যারা রক্ত দিয়ে আজকের এই পরিবেশ দিয়ে গিয়েছে, আমরা তাদের প্রতি ঋণী এবং কৃতজ্ঞ। এই ঋণের দায় আমাদের আজীবন শোধ করতে হবে। কতজন আদম সন্তানকে দুনিয়া থেকে বিদায় করা হয়েছে সঠিক হিসাব কেউ দিতে পারবে না। আন্দোলনের শেষ দিনগুলোতে ইন্টারনেট বন্ধ রেখে, সবকিছু অন্ধকারে রেখে অনেক লাশ গুম করা হয়েছে। স্তূপে স্তূপে লাশ। ট্রাকের ওপর ছুড়ে মারা হয়েছে। তারপর পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে লাশগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা শহীদদের ঋণ কোনোদিন শোধ করতে পারবো না।’

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, ‘এত ক্ষমতার মালিক তো দেশ ছেড়ে পালালেন কেনো। সে ক্ষমতার দাপটে কিয়ামত পর্যন্ত টিকে থাকার চেষ্টা করতেন। আপনাদের পলায়ন, আপনাদের পরাজয়ই প্রমাণ করেছে, সর্বময় ক্ষমতার মালিক একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামিন।’

তিনি বলেন, ‘ইজ্জত দেওয়ার মালিক আল্লাহ, ইজ্জত কেড়ে নেওয়ার মালিকও আল্লাহ। আল্লাহ আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন, তোমরা যেন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করো। আর তোমরা মানুষের প্রতি সম্মান দেখাও, এহসান করো। এটি আল্লাহর হুকুম। যারা ন্যায়বিচার করবে, যারা মানুষকে সম্মান করবে, যারা মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য করবে– আল্লাহ তাদের ইজ্জত বাড়িয়ে দেবেন। আর যারা সমাজে জুলুম এবং অবিচারের প্রচলন করবে, মানুষকে অসম্মান করবে, আল্লাহ তাদের সম্মান এবং রাজত্ব দুটোই কেড়ে নেবেন। আল্লাহ বলছেন, “ক্ষমতা আমি দিই, ক্ষমতা আমি কেড়ে নিই। ইজ্জত আমি দিই, ইজ্জত আমি কেড়ে নিই”।’

১৫ বছর রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে জামায়াতের এমন কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো।

কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমির ড. মো. কেরামত আলী। আর সমাবেশ পরিচালনা করেন মহানগরের সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মণ্ডল।

অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন– কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য নুরুল ইসলাম বুলবুল, মোবারক হোসাইন, রাজশাহী অঞ্চল পরিচালক অধ্যক্ষ মো. সাহাবুদ্দিন প্রমুখ।

খুলনা গেজেট/ টিএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!